জড়তা আবার কি?
তারেকুর রহমান
জিতু ও তার বাবা মিলে বাসে করে এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছে। ঢাকায় বাসে সবসময় মানুষ গিজগিজ করে। অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কারনে বাসের ভেতরে ধাক্কাধাক্কি লেগেই থাকে। হঠাত বাস থামার সাথে সাথে পেছনের মানুষ গুলোর উপর পড়ে গেলো। একজন আরেকজনের উপর পড়ার কারনে বাসের ভেতরেই শোরগোল শুরু হয়ে গেলো। এতা যে ইচ্ছে করেই কেউ পড়েনি তা কাউকেই বুঝানো যাচ্ছেনা। জিতু ও তার বাবা বিশয়টা ভালোকরে দেখছে। হঠাত আবার বাস চলতে শুরুকরলো। এবার দাঁড়িয়ে থাকা সামনের যাত্রীগুলো পিছনের যাত্রী গুলোর উপর পড়ে গেলো। আবার শোরগল শুরু হয়ে গেলো। অনেকেতো হাতাহাতি শুরু করে দিলো। এই ঘটনা দেখে জিতু খুব বিরক্ত হয়ে গেলো। জিতু দাঁড়িয়ে বললো ,
-আপনারা সবাই একটু থামেন।
একজন দাঁড়িয়ে বললো,
-এই ছেলে তুমি আবার কি বলতে চাও।
জিতু একটু ঘাবড়ে যায়। কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললো,
-আমি তেমন কিছু বলবোনা। শুধু একটা কথা বলতে চাই আপনারা অযথা যেটা নিয়ে ঝগড়া করছেন তা স¤পর্কে আপনারা কিছু জানেন?
একজন টিটকারি করে বললো,
-না আমরা কিছুই জানিনা সব তুমিই জানো। তো তুমি কি জানো বলো দেখি।
জিতু বললো ,
-শোনেন আপনারা, এই যে অযথা ঝগড়া করছেন এর পেছনে একটা সায়েন্স আছে। কিন্তু কি সে সায়েন্স সেই প্রশ্ন আপনার করতে পারেন। সায়েন্সটা হলো জড়তা। জড়তা শব্দতার সাথে আপনারা কেউ কেউ পরিচিত আবার কেউ কেউ পরিচিত না। বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সেই অবস্থায় থাকার প্রবণতাকেই জড়তা বলে। জড়তা আবার দুই প্রকার এক হলো স্থিতি জড়তা আর দুই হলো গতি জড়তা। বাস হঠাত থেমে যাওয়ার কারনে আপনারা একজন আরেকজনের উপর পড়েছেন এটা হলো গতি জড়তা। গতিশীল বস্তু তার নিজের গতীতে চলতে চাওয়ার প্রবণতাকে গতি জড়তা বলে। বাসটি গতিশীল ছিলো হঠাত যখন থেমে যায় তখন গতি জড়তার কারনে একজন আরেকজনের উপর গিয়ে পড়েছেন। আবার যখন বাস চলতে শুরু করলো তখন সামনের সবাই গিয়ে পেছনেরদিকে গিয়ে পড়েছেন। এটা স্থিতি জড়তার কারনেই হয়েছে। স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকার প্রবণতাকে স্থিতি জড়তা বলে।
জিতুর কথা শোনে একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকাতে থাকল।
একজন বললো,
-আসলে আমরা এভাবে চিন্তা করিনি। আমরা ভাবছি ইচ্ছে করেই কেউ ধাক্কা দিচ্ছিলো। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের ভুল সংশোধন করে দেয়ার জন্য।
No comments:
Write comments